সাম্প্রতিক সময়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক কর্তৃক সাক্ষাত প্রার্থী জনগণনের সাথে আক্রমণাত্মক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে ময়মনসিংহের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন, যুব সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, নারী সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। ২৯ জানুয়ারি এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভালুকায় অবস্থিত এডাম স্টাইলের শ্রমিকরা বকেয়া মজুরির দাবিতে গত ২১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ দিনভর ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচিতে জেলা ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সাধারণ সম্পাদক তফাজ্জল হোসেনসহ বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ সংহতি প্রকাশ করেন। বিকালে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম তার কার্যালয়ে এসে শ্রমিক প্রতিনিধিদের কথা বলতে ডাকেন। এসময় কারখানার শ্রমিকরাসহ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বকেয়া মজুরি পরিশোধের জন্য মালিক কর্তৃপক্ষের বার বার তারিখ বরখেলাপ করার কথা জেলা প্রশাসককে জানান। শ্রমিকরা গত ৩ মাস ধরে মজুরি না পাওয়ায় ঘরভাড়া ও দোকানের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছে না। এ কারণে বাড়ির মালিকরা শ্রমিকদের ঘর থেকে বের করে দেয়া ও দোকানে বাকি দেয়া বন্ধ করে দেয়ার মত মানবেতর জীবন যাপনের চিত্র তুলে ধরেন। এহেন অবস্থায় শ্রমিকরা তাদের মজুরি আদায় করে দেয়ার জন্য ডিসিকে অনুরোধ জানান। এসময় ডিসি উত্তেজিত হয়ে শ্রমিকদের ধমক শুরু করেন। উপস্থিত শ্রমিক নেতারা শ্রমিকদের দাবির প্রতি সমর্থন জানালে ডিসি তাদের উপরেও ক্ষিপ্ত হন। জেলা শ্রম ক্রাইসিস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ও ট্রেড ইউনিয়নের সেক্রেটারি তফাজ্জল হোসেনের প্রতি শ্রমিকদের উত্তেজিত করার অভিযোগ এনে তার উপর মামলা করার হুমকি প্রদান করেন জেলা প্রশাসক।এদিকে, গত ১১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক জয়নুল আবেদিন পার্ক হতে ভ্রাম্যমাণ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদ করা হয়। এর কারণে ভ্রাম্যমাণ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা একটি নীতিমালার আলোকে পার্কের নির্দিষ্ট স্থানে পুনর্বাসনের দাবীতে ধারাবাহিক আন্দোলন করছে। যারপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক গত ২৭ জানুয়ারি ২০২৫ জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে ময়মনসিংহ শহরের যানজট নিরসন এবং জযনুল আবেদিন পার্ক এলাকার সঠিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত আলোচনা সভা জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত আলোচনা সভায় বিষয়টির যথাযথ সুরাহা না হলে আলোচনা সভা শেষে ডিসি অফিসের নিচে উচ্ছেদকৃত ক্ষুদ্র ও ভ্রাম্যমাণ উদ্যোক্তা সংগঠনের সদস্যগণ ডিসি’র গাড়ীর কাছে দাঁড়িয়ে সমাধান জানতে চায়। এ সময় ডিসি দ্রুতগতিতে এলাকা ত্যাগ করাকালে একজন সদস্য গাড়ীর সামনে দাঁড়ালে গাড়ী ধাক্কা দিয়ে প্রায় চল্লিশ হাত দূরে নিয়ে যায়। উক্ত দু’টি ঘটনার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা কর্তৃক এহেন আক্রমণাত্মক আচরণে বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, ময়মনসিংহ জেলা শাখা,জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী), নয়াগণতান্ত্রিক গণমোর্চা,বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন,বাংলাদেশ যুব ফ্রন্ট,সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট,বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলন, জাতীয় ছাত্রদল,বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি,সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর ও কৃষক সংগঠন, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম,গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি,বিপ্লবী নারী মুক্তি, বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্র, বাংলাদেশ শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন,বিপ্লবী শ্রমিক আন্দোলন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ,বাংলাদেশ হোটেল রেস্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন, ময়মনসিংহ জেলা মটরস ওয়ার্কশপ মেকানিক ইউনিয়ন,ময়মনসিংহ জেলা মটরসাইকেল ওয়ার্কসপ মেকানিক্স ইউনিয়ন,ময়মনসিংহ দর্জি শ্রমিক ইউনিয়ন,ময়মনসিংহ সদর উপজেলা দোকান কর্মচারী ইউনিয়ন,ময়মনসিংহ জেলা রঙ মিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়ন,ময়মনসিংহ জেলা পাওয়ার মেইনটেন্যান্স শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন,ময়মনসিংহ জেলা টাইলস মিস্ত্রি শ্রমিক ইউনিয়ন,ময়মনসিংহ জেলা বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ শ্রমিক সংঘ,ময়মনসিংহ জেলা রিক্সা চালক সমিতি, ময়মনসিংহ জেলা ভ্যান ও ঠেলাগাড়ি শ্রমিক সংঘ, সমাজ রূপান্তর সাংস্কৃতিক সংঘ, ময়মনসিংহ চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, ধ্রুবতারা সাংস্কৃতিক সংসদ ও ময়মনসিংহ ভ্রাম্যমাণ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সুহৃদ সমাজ তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন ও প্রতিবাদ জানান। প্রেস বিজ্ঞপ্তি